সোমবার ৩০ জুন ২০২৫ , (০৫:৫১ AM) / ১৫ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দূযোগ-দূর্ভোগ

লক্ষ্মীপুর বাস টার্মিনাল খানা খন্দে ভরা, যাত্রীদের দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার   লক্ষ্মীপুর

২৮ জুন ২০২৫


লক্ষ্মীপুর বাস টার্মিনাল এলাকার ভয়াবহ দৃশ্য
লক্ষ্মীপুর বাস টার্মিনাল এলাকার ভয়াবহ দৃশ্য | ছবি: নয়া চাঁদ

লক্ষ্মীপুরের একমাত্র বাস টার্মিনাল পৌর বাস টার্মিনাল। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে এটি এখন খানাখন্দে ডোবায় পরিনত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই চরম দূর্ভোগের শিকার হয় যাত্রী সহ চালক-হেলপার ও বাস মালিকরা। পৌর কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি না থাকার ফলে এমন হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। তবে দুর্ভোগ কমানোর বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান  পৌর প্রশাসক জসিম উদ্দিন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বড় বড় গর্তে বৃষ্টির পানি জমে আছে। কাদার কারণে চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এসব কাদা মাড়িয়ে যাত্রীরা বাসে ওঠা নামা করছে। এতেকরে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিক, চালক ও ব্যবসায়ীরা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। টার্মিনালের মূল চত্বর ব্যবহার না করে বাধ্য হয়ে প্রধান সড়কে যাত্রী ওঠানামা করতে হচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা। টার্মিনালে খানাখন্দে আটকে গিয়ে অনেক সময় নষ্ট হয় বাসের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে।

তাছাড়া টার্মিনালের সীমানা প্রাচীরও ভেঙ্গে গেছে বহু আগে। এতে করে নিরাপত্তাহীনভাবে গাড়ী ও চালকদের টার্মিনালে থাকতে হয়। নিয়মিত টোল আদায় করা হলেও পৌর কর্তৃপক্ষের সাড়া মিলছেনা। এতে করে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে বাস টার্মিনালের এখন এমনি বেহাল দশা বলে অভিযোগ করেন -  যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা। 

১৯৯৬ সালে বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করা হলেও ২০০৮ সালের দিকে কোটি টাকা ব্যায়ে একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। সে ভবনটি এখন ভঙ্গুর অবস্থা। ভবনের ছাদ ও দেয়াল থেকে খসে পড়ছে আস্তর। যে কোন মূহুর্তে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ।
আবার কেউ বলছেন, পূর্ব পাশে পুকুর থাকলেও পানি নিস্কাশন হচ্ছেনা, রাতের বেলায় অন্ধকারে থাকতে হয়, বিদ্যুতের লাইট গুলোও ঠিকমতো নাজালা এবং নিরাপত্তাহীন থাকাসহ নানা সমস্যা তুলে পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাস শ্রমিক সেকু বলেন, টার্মিনালে দেয়াল (সীমানা প্রাচীর) নেই, রাতে চোর ঢুকে, নেশাগ্রস্থরা আড্ডা জমায়, গাড়ী চলাচলের মতো  নয়, গাড়ী ভেঙ্গে যায়, কেন আমাদের এতো দূর্ভোগ সেটি কখনো পৌর কর্তৃপক্ষ দেখেনা।
শাহী বাসের চালক নুরুল ইসলাম নুরু বলেন, অন্য জেলার টার্মিনালের সঙ্গে আমাদের জেলার টার্মিনালের  কোন মিল নেই, আমরা নিয়মিত পৌর টোল দিয়ে আসছি, কিন্তু কাজ  হয়না, যাত্রীরা টার্মিনালে আসতে চায়না। 
চালকরা জানান, বেহাল টার্মিনালে কোন নিরাপত্তা নাই, গাড়ী রেখে গেলে মালামাল চুরি হয়। বড় বড় গর্তে গাড়ীর যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়। টার্মিনালে কোন গাড়ী ঢুকেনা এ জন্য আমরা সমস্যায় আছি। বর্ষাকালে আসলে কোন যাত্রীও আসেনা। ২০ -২৫ জনের বেশী যাত্রী পাওয়া যায়না।  
ঢাকা এক্সপ্রেসের ম্যানেজার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ টার্মিনাল থেকে যাত্রী আসা যাওয়া করে। বর্তমানে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে, ছাদ খসে আস্তর পড়ে। যে কোন মুহুর্তে ভবনটি ধ্বসে পড়লে বহু প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। 
ইকোনো ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার জুয়েল, বর্ষায় কাদা-পানি আর শুস্ক মৌসুমে বালিতে ভরে যায়, বড় গর্তে গাড়ী দূর্ঘটনার শিকার হয়, সবচেয়ে বড় সমস্যা নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। বিষয় গুলো নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবী জানান তিনি।

পৌর প্রশাসক জসীম উদ্দিন বলেন, টার্মিনালের নাজুক পরিস্থিতি সত্য একটি ঘটনা। শীঘ্রই দুর্ভোগ কাটাতে কিছু কাজ করা হবে। খুশির বিষয় হচ্ছে- টার্মিনালটিকে আধুনিকভাবে গড়ে তুলতে একটি মেঘা প্রজেক্ট নেয়া হয়েছে। আনুমানিক ৫ কোটি টাকার প্রজেক্ট হবে এটি, যা বরাদ্ধ পেলে আধুনিক বাস টার্মিনালে রুপান্তিরত হবে পৌর বাসটার্মিনাল। ফলে দুর্ভোগ কমে সুফল পাবে যাত্রীরা।