সোমবার ৩০ জুন ২০২৫ , (০৪:১৩ PM) / ১৬ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দূযোগ-দূর্ভোগ

রামগঞ্জ শহরের বুকে ময়লার স্তুপের বয়স এক যুগ

মাহফুজ খান   লক্ষ্মীপুর

৩০ জুন ২০২৫


সড়কের পাশে ময়লার স্তুপ, স্বাস্থ্য ঝুকি..
সড়কের পাশে ময়লার স্তুপ, স্বাস্থ্য ঝুকি.. | ছবি: নয়া চাঁদ

লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ পৌর শহরের কেন্দ্রস্থল এবং সোনাপুর বাজার জুড়ে পরিবেশ ও অবকাঠামোগত সংকট যেন দীর্ঘস্থায়ী ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। শহরের মহাসড়কের পাশে দীর্ঘ এক যুগ ধরে জমে থাকা ময়লার স্তুপ জনস্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যের জন্য হুমকি। পরিবেশ দূষণ সহ সাধারণ মানুষের জীবনকে করে তুলেছে দুর্বিষহ। রামগঞ্জ পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র মহাসড়কের পাশে, যেখান থেকে মাত্র ১০০ গজের দূরত্বে অবস্থিত উপজেলার প্রসিদ্ধ দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রামগঞ্জ সরকারি কলেজ ও রামগঞ্জ কামিল মাদ্রাসা। শিক্ষার্থী ও পথচারীরা প্রতিদিন নাক চেপে, দুর্গন্ধ সহ্য করে চলাফেরা করতে বাধ্য হচ্ছেন। বাতাসে ছড়িয়ে থাকা ধুলোবালি, পঁচা আবর্জনার গন্ধ এবং বর্জ্য থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বহুবার পৌরসভা ও জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করা হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং প্রতিশ্রুতি আর আশ্বাসই যেন তাদের নিত্যসঙ্গী। সড়কের পাশে ময়লা ফেলার প্রতিবাদে কয়েকবার স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানালেও কোনো সুফল মিলছে না। তবে গত ৭/৮ মাসে এর মাত্রা বেশী লক্ষণীয়। দীর্ঘদিনেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নির্দিষ্ট জমি বা স্পট নির্ধারণ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় এক শিক্ষার্থী জানায়, রোজ সকালে ক্লাসে আসার সময়ই মনে হয় যেন ডাস্টবিনের ভেতর দিয়ে হেঁটে আসছি। আমরা স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলি, অথচ স্কুল-কলেজের পাশে এমন পরিবেশ ভাবতেও খারাপ লাগে। শুধু শহরের কেন্দ্র নয়, পৌর এলাকার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র সোনাপুর বাজারের চিত্রও ভিন্ন নয়। বাজারের রাস্তাগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। কোথাও খানাখন্দ, কোথাও পানি জমে কাদার সাগর। বৃষ্টির দিনে সড়ক ও ড্রেনের পার্থক্য বোঝা যায় না। ব্যবসায়ীরা জানান, বেহাল রাস্তায় কাঁচামাল পরিবহন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ক্রেতারাও বাজারে আসতে অনীহা দেখাচ্ছেন। এতে অর্থনীতির উপরও পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। পরিবেশ সচেতন নাগরিকরা বলছেন, অবিলম্বে ময়লার স্তুপ অপসারণ, নির্ধারিত ডাম্পিং স্থান নির্ধারণ এবং বাজার এলাকায় রাস্তা সংস্কার না হলে জনজীবনে চরম সংকট তৈরি হতে পারে। শহরের পরিবেশ ও অবকাঠামো রক্ষায় এখনই শক্ত ও সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। অন্যথায় এই দুর্দশা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ভয়াবহ এক অভিশাপ হয়ে দাঁড়াবে। এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস,এম, রবিন শীষ বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। মূলথ এটি দীর্ঘ দিনের সমস্যা। তবে স্থানীয়দের মধ্যে কোন সচেতনতা নেই। যে যার ইচ্ছেমতে ময়লা ফেলছে। স্যানেটারি কর্মকর্তা সহ আমরা সচেতন রয়েছি। বিষয়টি গুরত্বসহ দেখছি। এসব ময়লা রাতের বেলা কিংবা ভোর বেলায় আগুন দিয়ে পোড়ানো হচ্ছে। পরবর্তীতে এখানে ময়লা ফেললে তাদের বিরদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।