কমবে ভোগান্তি বাড়বে যানজট-নিজ ঘরে ফিরছে লক্ষ্মীপুর পৌরসভা
নয়া চাঁদ ডেস্ক
লক্ষ্মীপুর
২৬ জুন ২০২৫
চলছে পৌর কার্যালয়ের সংস্কার কাজ | ছবি: নয়া চাঁদ
অবশেষে ভাড়া ভবন ছেড়ে নিজস্ব ভবনে ফিরছে লক্ষ্মীপুর পৌরসভা কার্যালয়। প্রশাসনিক ও দাপ্তরিক কক্ষ তৈরির পাশাপাশি কার্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কার চলছে পুরোদমে। আধুনিক পৌর বিপনী বিতাণের ৪র্থ তলায় চলছে এই কার্যক্রম। খুব অল্প সময়ের মধ্যে পৌরসভা কার্যালয় স্থানান্তর হয়ে আসবে এবং এখান থেকেই সেবাগ্রহিতাদের সেবা দিতে পারবে বলে নিশ্চিত করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। নিজ ভবনে পৌর কার্যক্রম চালু হলে পৌরবাসীর ভোগান্তি কিছুটা লাগব হবে।
তবে ভবনের সামনে যথেষ্ট পাকিং না থাকায় সৃষ্টি হবে শহরে যানজট। ভবনের নিচে পার্কিং ব্যবস্থা থাকলে সেটি ইজারা দেয়া হয়েছে। সবদিক বিবেচনায় সঠিক সিদ্ধান্ত নিবে পৌর প্রশাসন। এমনটাই মনে করছে সচেতন মহল।
এর আগেও একই স্থানে ছিল পৌরভবন। প্রয়াত সাবেক মেয়র আবু তাহের বহুতল ভবন নির্মাণের পর কার্যালয় স্থানান্তর করা হয় সামনের ভবন পৌর মার্কেটে। সেখানে বেশ সময় কার্যালয়ের কার্যক্রম থাকলেও সাবেক মেয়র মোজাম্মেলন হায়দর মাসুম ভূঁইয়া নির্বাচিত হওয়ার পর পৌর কার্যালয় আবারো স্থানান্তর করা হয়। নিয়ে যায় হয় উত্তর স্টেশন নিজ আত্মীয় (মাসুম ভূঁইয়ার মামা) সাবেক জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি মরহুম ফজলুর রহমানের ইউনিক ভবনে। পৌরসভার নিজস্ব সম্পত্তি থাকলেও স্থায়ী কোন পৌর কার্যালয় ভবন নাই। সংস্কার আর একাধিক স্থানান্তরেই কোটি টাকা নাই হয়ে যায়। তাছাড়া সেবাগ্রহিতাদের হয়রানী ছিল অভাবনীয়।
তবে এবার স্থায়ীভাবে নিজস্ব ভবনে কার্যালয় আসার ফলে কমে যাবে বাড়তি ভাড়া সহ আনুষাঙ্গিক বিভিন্ন খাতের পৌর খরচ। ভারী হবে পৌরসভার আয়ের খাত। বর্তমান প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে পৌরবাসী।
পৌর ভবনের চার তলায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের পুরো একটি তলায় সকল কার্যক্রম একসাথে করা সম্ভব। বিভিন্ন দাপ্তরিক শাখা অনুযায়ী প্রতিটি দপ্তরের জন্য তৈরি করা হচ্ছে আলাদা কক্ষ। মেয়র, সচিব, প্রকৌশলী শাখা, স্বাস্থ্য, লাইসেন্স, কাউন্সিলরদের কক্ষ সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের আলাদা করে তৈরি করা হচ্ছে নির্দিষ্ট কক্ষ। ফলে একজন সেবাগ্রহিতা এক ছাদের নিচে পাবে সকল সেবা। এটি দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল পৌরবাসীর।
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ ফারাভী বলেন, বিগত সময় যারা পৌর দায়িত্বে ছিলেন, তারা পৌরবাসীর প্রতি অন্যায় করছে জুলুম করেছে। নিজস্ব জায়গা ভবন থাকা স্বত্বেও ভাড়া ভবনে পৌরসভার কার্যক্রম পরিচালনা করে গেছে। ফলে পৌরবাসী টেক্সের টাকা খরচ হতো অপ্রয়োজনীয়তা হিসেবে।
বর্তমান পৌর প্রশাসকের আন্তরিকতায় আমাদের প্রচেষ্টায় নিজস্ব ভবনে কার্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পৌর বিপণী বিতাণ ভবনের ৪র্থ তলায় সংস্কারের কাজ চলছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সেখানে স্থান্তান্তর করা হবে এবং স্থায়ীভাবে একই ছাদের নিচে পৌরবাসী সকল সেবা পাবে। হয়রানী মুক্ত হওয়ার পাশাপাশি অযাচিত খরচ কমিয়ে সঠিক স্থানে ব্যবহার হবে পৌরবাসীর টেক্সের টাকা।
১৯৭৬ সালে পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর ১৯৮৪ সালে শহরে উন্নীত হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে ক” শ্রেণীভূক্ত হয়। পৌরসভার বর্তমান আয়তন ২৭.০০বর্গ কিলোমিটার। স্থায়ী-অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২০০জন। দীর্ঘ সময় পৌর সেবাগ্রহিতাদের সেবা দিতে নিজস্ব ভবন না থাকায় সমালোচিত হয়ে আসছে পৌরসভাটি। দায়িত্বভার গ্রহন করে নিজ আখের গোছানো নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন জনপ্রতিনিধিরা। এমনটাই মন্তব্য করেন পৌরবাসী।